সরকার সালাহউদ্দীন সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি:
উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র পাঁচজন। অথচ তাদের পাঠদানের জন্য শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন চারজন।
(১৬ নভেম্বর)দুপুরে স্কুলে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শুধু উপস্থিতিই নয়,প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ। এসব বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েও সুফল মিলছে না বলে জানায় ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক।
সরেজমিনে দেখা গেছে,পঞ্চম শ্রেণীতে তিনজন,তৃতীয় শ্রেণীতে দুইজন এবং চতুর্থ শ্রেণীতে কোন শিক্ষার্থীই নাই। মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত আছে। আর শিক্ষক আছেন চারজন। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করে অফিস কক্ষে বসে গল্প করছিলেন সহকারী শিক্ষক ফারমেনা ও মিলি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরবানু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে গেছেন বাহিরে।
অপর সহকারী শিক্ষক আরজুমান বর্তমানে মাতৃকালন ছুটিতে। অফিস কষ্ট আবর্জনায় ভরপুর। এছাড়া প্রধান শিক্ষকের কক্ষের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি।
২০২২-২৩ অর্থ বছরের শিশুশ্রেণীর ১০ হাজার এবং স্লিপ বাবদ ৫০ হাজার টাকা স্কুলের সংস্কার বাবদ ব্যায় করার কথা থাকলেও পুরো টাকাই পকেটজাত করেছেন প্রধান শিক্ষক।
২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারিকরণ হয় । প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুসারে স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৪ জন। বর্তমানে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র পাঁচজনে।
স্থানীয় বাসিন্দা মজিদা বেগম বলেন,প্রধান শিক্ষক নুরবানু তার নিজের খেয়াল-খুশি মত স্কুল পরিচালনা করেন। শিক্ষার্থীরা লেখা-পড়ায় অমনোযোগী হলেও বিষয়টি নিয়ে তার কোন মাথা ব্যথা নেই। এমনকি পঞ্চম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী নিজের নামটাও ভালোভাবে লিখতে জানেন না। তাই এই স্কুলে বাচ্চাদের কেউ ভর্তি করতে চাচ্ছে না।
প্রধান শিক্ষক নুরবানু বলেন,আমাদের স্কুলে মোট শিক্ষার্থী ১০৪ জন। স্কুলের জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে। এখানে অস্থায়ীভাবে ১৫ শতাংশ জায়গা কিনে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান দেখেছি। নতুন ভবন নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীর সংকট থাকবে না। ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলমুখী করার জন্য হোমভিজিট চলমান রয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত)এ কে এম সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, সংশ্লিষ্ট সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ এম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন,বিষয়গুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।